‘সেদিন ককপিটে বিমানের হাল ধরেন কাঁচেরকোলের পাইলট মোস্তাকিম’

বিশেষ প্রতিবেদন [] ভারতের রায়পুরের আকাশে থাকাকালে হুট করেই নিথর হয়ে পড়েন ক্যাপ্টেন নওশাদ আতাউল কাইয়ুম। এক দিকে ক্যাপ্টেন নওশাদের নিথর দেহ, অন্য দিকে ১২৪ জন যাত্রী। ঘাবড়ে না গিয়ে তখনই ককপিটের কন্ট্রোল নেন সঙ্গে থাকা ফার্স্ট অফিসার মোস্তাকিম পিয়াস।
বাংলাদেশ বিমানের ফার্স্ট অফিসার পাইলট মোস্তাকিম পিয়াসের গ্রামের বাড়ি কাঁচেরকোলের সাদেকপুর গ্রামে। তিনি শৈলকুপা পাইলট হাইস্কুল থেকে মাধ্যমিক শেষ করে যশোর ক্যান্টনমেন্ট কলেজে ভর্তি হন। পড়ালেখা শেষে এরপর তিনি যোগদান করেন বাংলাদেশ বিমানে।
মাত্র ৪ বছর আগে বিমানে যোগ দিয়েছেন তিনি। তরুণ হলে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে তিনি ভুল করেননি সেদিন। এই তরুণ পাইলট একদিন ক্যাপ্টেন নওশাদের মতো আরও সুখ্যাতি অর্জন করবে বলে মনে করছেন বিমানের বিশেষজ্ঞরা।
সেদিন যেভাবে ককপিটে বিমানের হাল ধরেন কাঁচেরকোলের পাইলট মোস্তাকিম-
বোয়িং ৭৩৭-৮০০ উড়োজাহাজে ১২৪ জন যাত্রী নিয়ে মাস্কাট-ঢাকা পথে আসছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট। ভারতের রায়পুরের আকাশে থাকাকালে হুট করেই নিথর হয়ে পড়েন ক্যাপ্টেন নওশাদ আতাউল কাইয়ুম। একদিকে ক্যাপ্টেন নওশাদের নিথর দেহ, অন্যদিকে ১২৪ জন যাত্রী। ঘাবড়ে না গিয়ে তখনই ককপিটের কন্ট্রোল নেন সঙ্গে থাকা ফার্স্ট অফিসার। ঘোষণা করেন মেডিক্যাল ইমার্জেন্সে। ক্যাপ্টেন নওশাদ অসুস্থ হওয়ার ২৫ মিনিটের মধ্যে নাগপুরের ড. বাবা সাহেব আম্বেদকার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নিরাপদে অবতরণ করে উড়োজাহাজটি।

গত ২৭ আগস্ট বিজি ০২২ ফ্লাইটে থাকা ক্রদের বর্ণনায় উঠে এসেছে সেদিনের ঘটনা। সেই ফ্লাইটে ১২৪ জন যাত্রী ছাড়াও ২ জন ককপিট ক্রু ও ৬ জন কেবিন ক্রু ছিলেন। হুট করে ককপিট থেকে ফার্স্ট অফিসার জানালেন ক্যাপ্টেন নওশাদ অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। ককপিটে গিয়ে আমরা তার অবস্থা দেখে কেবিন ক্বুরুরা বুঝতে পারি তিনি মারাত্কভাবে হার্ট অ্যাটাক করেছেন। তার নিজের যে খারাপ লাগছে, কিংবা অসুস্থ বোধ করছেন- এ কথা বলারও সুযোগ পাননি। তিনি সিটে ঢলে পড়েছেন।
ফার্স্ট অফিসার মেডিক্যালে ইমার্জেন্সি ঘোষণা করে দ্রুত জরুরি অবতরণের জন্য কন্ট্রোল টাওয়ারে যোগাযোগ শুরু করেন। নওশাদ অসুস্থ হওয়ার ২৫ মিনিটের মধ্যে নাগপুর এয়ারপোর্টে নিরাপদে অবতরণ করে উড়োজাহাজ। আগে থেকেই বিমানবন্দরে অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত ছিলো। রানওয়েতে নামা মাত্রা দ্রুত ক্যাপ্টেন নওশাদ আতাউল কাইউমকে উড়োজাহাজ থেকে নামিয়ে অ্যাম্বুলেন্স করে হাসপাতলে পাঠানো হয়।

ক্যাপ্টেন নওশাদের সিভিআর হার্ট অ্যাটাক করার পর তার দ্রুত চিকিৎসার জন্য ১২৪ জন যাত্রী নিয়ে দ্রুত জরুরি অবতরণ করতে সক্ষম হন তরুণ ফার্স্ট অফিসার।
তার নাম মোস্তাকিম পিয়াস। মাত্র ৪ বছর আগে বিমানে যোগ দিয়েছেন। তরুণ হলে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে তিনি ভুল করেননি। এই তরুণ পাইলট একদিন ক্যাপ্টেন নওশাদের মতো আরও সুখ্যাতি অর্জন করবে- ডাকুয়া২৪.কমের পক্ষ থেকে শুভ কামনা এবং আমরা তার উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি কামনা করি।
Social Link