বেনীপুর হাইস্কুলের শিক্ষকের পরিবারকে পানির ট্যাংকে বিষ দিয়ে হত্যাচেষ্টা

কাঁচেরকোল ইউনিয়নের উত্তর কচুয়া গ্রামের বেনীপুর বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকের পরিবারকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিষয়টি টের পেয়ে বিষমিশ্রিত ওই পানি ব্যবহার বন্ধ রেখেছে পরিবার। এ ব্যাপারে শৈলকুপা থানায় নিরাপত্তা চেয়ে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছে পরিবারটি।
বেনীপুর বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক দেবাশীষ কুমার বিশ্বাস (রতন স্যার) জানান, মঙ্গলবার (২২ জুন) সন্ধ্যার দিকে তিনি ও তার ভাই আশীষ কুমার বিশ্বাসের বাড়ির ছাদের পানির ট্যাংকে উচ্চমাত্রার বিষ মিশিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। পানির ট্যাপ ছাড়ার পরই বিষ মিশ্রিত দুর্গন্ধ পানি বের হতে থাকে। বিষয়টি পরিবারের অন্য সদস্যরাও দেখেন। এরপর বিষয়টি কাঁচেরকোল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এ্যাড. সালাহ্উদ্দিন জোয়ার্দার মামুন ও কচুয়া তদন্ত পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ শামসুজ্জোহাকে জানানো হয়। পরে তারা এসে সরেজমিনে ঘটনা পরিদর্শন করেন।
পরিবারটির অভিযোগ, ২০০১ সাল থেকে একটি প্রভাবশালী মহল তাদের সহায়-সম্পত্তি ভোগদখল করতে নানাভাবে অত্যাচার করে যাচ্ছে। তার অংশ হিসেবে গোটা পরিবারকে হত্যার ছক কষা হয়। বর্তমানে ছয় সদস্যের পরিবারের সবাই চরম নিরাপত্তাহীনতায় সময় পার করছেন।

পরিবারের বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থী আদিতি বিশ্বাস জানান, তাদের পরিবারটির পূর্ব থেকেই শিক্ষা-দীক্ষায় সুনাম রয়েছে। তাছাড়া বিত্তশালী আর সামাজিক মর্যাদাসম্পন্ন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের এ পরিবারকে নিশ্চিহ্ন করতে পরিকল্পিতভাবেই কেউ পানির ট্যাংকে বিষ প্রয়োগ করেছে বলে অভিযোগ করেন। ৭২ ঘন্টা পার হলেও অজানা ভীতিতে স্বাভাবিক হতে পারেনি পরিবারের সদস্যরা।
এ ব্যাপারে কাঁচেরকোল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এ্যাড. সালাহ্উদ্দিন জোয়ার্দার মামুন বলেন, বিষয়টি মর্মাহত এবং দুঃখজনক। ঘটনা জানার পর সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ কর্মকর্তাদের নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করি এবং ঘটনার সত্যতা মিলেছে। নিকৃষ্ট কাজটি যে বা যারাই করেছে তাদের কঠোর শাস্তির আওতায় আনতে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

শৈলকুপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, বর্বরোচিত এ ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত করতে সব ধরনের প্রশাসনিক তৎপরতা চালানো হচ্ছে। উত্তর কচুয়া গ্রামের এ পরিবারটির নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। প্রকৃত দোষীদের খুঁজে বের করতে পুলিশ কাজ করছে।
এদিকে, বেনীপুর বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। দোষীদের শাস্তির আওতায় আনতে তারা প্রশাসনের সহয়তা চেয়েছে।
Social Link