প্রতিশোধ নিতে গিয়ে যেভাবে হত্যা করা হয় স্কুলছাত্র জুয়েলকে

নিজস্ব প্রতিবেদক [] শৈলকুপা উপজেলার কাঁচেরকোল ইউনিয়নের সাদেকপুর গ্রামের ধানক্ষেত থেকে জুয়েল হোসেন (১৪) নামে এক স্কুলছাত্রের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহত জুয়েলের সহপাঠীসহ দুইজনকে রাতেই আটক করে কচুয়া তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ। আটক দু’জন হলেন- সাদেকপুর গ্রামের রেজাউলের ছেলে রাতুল ও প্রতিবেশি সাগর। তাদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে রাতুল হত্যার কথা স্বীকার করে। পরে তাদের দেখানো স্থান থেকে উদ্ধার করা হয় হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত ধারালো অস্ত্র। এ ঘটনায় নিহতদের পিতা নজরুল ইসলাম বাদী হয়ে শৈলকুপায় থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করলে আটককৃতদের গ্রেফতার দেখানো হয়।
বুধবার (২ অক্টোবর) রাত সাড়ে আটটার দিকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহত জুয়েল হোসেন ওই গ্রামের নজরুল ইসলাম ওরফে নজর ছেলে। সে বেনীপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র ছিল।
কচুয়া তদন্ত কেন্দ্রের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিয়ার আলী ডাকুয়া২৪’কে জানান, তিন-চারদিন আগে ডাকুয়া নদীতে গোসল করতে যেয়ে নিহত জুয়েল ও তার ছোট ভাইয়ের সঙ্গে গ্রেফতার রাতুলের মারামারি হয়। এরপর রাতুল প্রতিশোধ নেয়ার জন্য প্রতিবেশী সাগরকে জানায়। সাগর ঘটনা শুনে রাতুলে বলে সন্ধ্যায় সাদেকপুর গ্রামের লোকমান মিয়ার বাড়ির পেছনে চুরি করে সুপারী পারার কথা বলে জুয়েলকে ডেকে নিয়ে যেতে এরপর যা করার বাকিটা আমি করবো।

ওসি বলেন, একসাথে কেরাম খেলার পর সন্ধ্যায় চুরি করে সুপারী পারার কথা বলে রাতুল জুয়েলকে ডেকে নিয়ে লোকমান মিয়ার বাড়ির পেছনে যায়। সেখানে যেয়ে রাতুল সাগরকে ফোন দেয়, কিন্তু রাতলের ফোনে পর্যাপ্ত টাকা না থাকার কারণে ফোন দিতে পারেনা। এরপর দা দিয়ে উপর্যুপরি শরীর ও মুখে জুয়েলকে কোপাতে থাকে রাতুল। কোপাতে কোপাতে মৃত্যু নিশ্চিত হলে মুখের উপর গামছা ফেলে চলে যায় ঘাতক রাতুল।
পিয়ার আলী আরও বলেন, আজ বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) ঝিনাইদহ জেলা জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে রাতুল ও সাগরকে নেয়া হবে এবং মহামান্য আদালতের নিকট ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হবে।
ঘটনার সাথে আর কেউ জড়িতা কি-না কিংবা হত্যাকাণ্ডে আর কারো ইন্ধন রয়েছে কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে ওসি পিয়ার আলী বলেন, তদন্ত চলছে। তদন্তের স্বার্থে এখন কিছুই বলা সম্ভব না। তদন্ত শেষে বিস্তারিত জানানো হবে।

শৈলকুপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বজলুর রহমান জানান, বুধবার সন্ধ্যায় গ্রামের একটি ধানক্ষেতে অজ্ঞাত ব্যক্তির লাশ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে। পরে লাশ উদ্ধারের ঘটনা জানাজানি হলে পরিবারের লোকজন গিয়ে নিহতের পরিচয় শনাক্ত করে। নিহতের গলা ও বুকে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
Social Link