শৈলকুপার দুই গ্রামে ১২ দিনে আক্রান্ত ৩৫ ডেঙ্গু রোগী

শহর এলাকার রোগ হিসেবে পরিচিত হলেও ঝিনাইদহের শৈলকুপার দুই গ্রামে দেখা দিয়েছে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব। উপজেলার দিগনগর ইউনিয়নের হারুন্দিয়া ও দহকোলা গ্রামে ১০-১২ দিনে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন ৩৫ জনের বেশি। এর মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
এতদিন ঢাকার বাইরে শনাক্ত হওয়া বেশিরভাগ ডেঙ্গু রোগীই ছিলেন ঢাকা থেকে আক্রান্ত হয়ে যাওয়া। কিন্তু এ দুই গ্রামের ডেঙ্গু রোগীদের সবাই নিজ নিজ বাড়িতে থেকে আক্রান্ত হওয়ায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে আশপাশের গ্রামেও। গ্রামবাসীর অভিযোগ, দুটি গ্রামে একের পর এক মানুষ ডেঙ্গু আক্রান্ত হলেও ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এডিস মশা নিধনের কোনো ব্যবস্থাই নেওয়া হয়নি।
গতকাল সোমবার হারুন্দিয়া ও দহকোলা গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, বাঁশবাগানে ঘেরা গ্রাম দুটিতে স্যাঁতসেঁতে অবস্থা বিরাজ করছে।
দহকোলা গ্রামের ঝিনাইদহ কেসি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্রী ডেঙ্গু আক্রান্ত সাথী খাতুন বলেন, তিনি নিজ বাড়িতে ঈদের আগে ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। গত রোববার ঝিনাইদহ সদর হাসপাতাল থেকে তাকে ও তার চাচিকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত তারা পুরোপুরি সুস্থ নন। সাথীর প্রতিবেশী তিথি খাতুন বলেন, তার চাচি বিউটি খাতুন, চাচাতো ভাই রুবেল, তারেকসহ চারজন ডেঙ্গু আক্রান্ত। তারা সবাই চিকিৎসাধীন।
দহকোলা গ্রামের দশম শ্রেণির ছাত্র তন্ময় জানায়, তার মা বিলকিছ খাতুন ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে ঝিনাইদহে চিকিৎসাধীন।
হারুন্দিয়া গ্রামে খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, সিরাজ বিশ্বাসের ছেলে রবিউল ইসলাম, মৃত আকবরের ছেলে রেজাউল, নুরুল মিস্ত্রির ছেলে মিজানুর, বাক্কার বিশ্বাস ও তার ছেলে মানিক বিশ্বাস, আমিরুলের স্ত্রী, ইউসুফ ফকিরের স্ত্রী, মিজানুরের স্ত্রী আরজিনা, জাফর বিশ্বাসের ছেলে রবিউল ইসলাম, সিদ্দিকসহ ১৫-২০ জন ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত। এর মধ্যে বাক্কার বিশ্বাসের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
এ গ্রামের রবিউলের স্ত্রী পলি খাতুন বলেন, তার স্বামী নিজ বাড়িতেই ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। রোববার তাকে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দিয়েছে।
দিগনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমান তপন তার ইউনিয়নের দুটি গ্রামে ডেঙ্গু আক্রান্তের কথা শুনেছেন বলে জানান এবং সবাইকে সচেতন হতে হবে। মঙ্গলবার থেকে গ্রাম দুটিসহ বিভিন্ন গ্রামে মশা নিধনের ওষুধ ছিটাবেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. রাকিব উদ্দিন বলেন, হারুন্দিয়া ও দহকোলা গ্রামে ডেঙ্গু আক্রান্তের তথ্য তার কাছে নেই।
এ ব্যাপারে শৈলকুপা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের ডাক্তার সিয়াম আহম্মেদ জানান, এ পর্যন্ত ১০ ডেঙ্গু রোগী শৈলকূপা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে শনাক্ত হয়েছে।
Social Link